Thursday, April 9, 2009

গত নির্বাচনে দুই নেত্রীর হলফনামা

সুত্র: http://priyo.com/forum/20081208/16993

বাগেরহাট-১ আসনে হাসিনার সম্ভাব্য ব্যয় ১১ লাখ টাকা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা এবার সম্ভাব্য নির্বাচনী ব্যয় ধরেছেন ১১ লাখ টাকা। এই টাকা তিনি নিজ তহবিল থেকে খরচ করবেন।

বাগেরহাট-১ আসনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামায় শেখ হাসিনা এই তথ্য দিয়েছেন। তিনি এবার বাগেরহাট ছাড়া গোপালগঞ্জ-৩ এবং রংপুর-৬ আসন থেকেও প্রার্থী হয়েছেন।

বাগেরহাটের মতো গোপালগঞ্জ-৩ আসনের মনোনয়নপত্রেও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী একই তথ্য দিয়েছেন। উভয় মনোনয়নপত্রে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শিক্ষাগত যোগ্যতা ‘বিএ’ এবং পেশা রাজনীতি বলে উল্লেখ করেছেন।

মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া আয়কর হিসাব বিবরণী অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সম্পদের প্রকৃত পরিমাণ তিন কোটি ৫৪ লাখ দুই হাজার ৯০৪ টাকা। তাঁর বছরে মোট আয় ২৯ লাখ ৭৭ হাজার ৬৭ টাকা। এর মধ্যে গৃহসম্পত্তি থেকে আয় চার লাখ ৪৮ হাজার টাকা, কৃষি থেকে আয় সাড়ে চার লাখ টাকা এবং ব্যাংকে আমানতের ওপর পাওয়া সুদ থেকে আয় ২০ লাখ ৭৯ হাজার ৬৭ টাকা।

শেখ হাসিনার সম্পত্তির মধ্যে আছে কৃষিজমি: নিজ নামে চার একর (অর্জনকালীন মূল্য পৌনে দুই লাখ টাকা), স্বামীর নামে এক একর (মূল্য: ১৫ হাজার টাকা)। যৌথ মালিকানাধীন পাঁচ একর জমির অর্ধেকের মালিক তিনি। দালান ও বাড়ি আছে, যার অর্জনকালীন মূল্য ৬৪ লাখ তিন হাজার ৯৫২ টাকা। গাড়ি আছে দুটি, যার একটির (ক্রয়মূল্য) ছয় লাখ টাকা এবং আরেকটি উপহার হিসেবে পেয়েছেন। স্বর্ণালংকার আছে ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকার ও আসবাবপত্র সাত লাখ ৪০ হাজার টাকার।

শেখ হাসিনার কাছে এখন নগদ ও ব্যাংকে জমা আছে তিন কোটি ১৮ লাখ ৮৪ হাজার ৯০৪ টাকা।
তাঁর বছরে পারিবারিক ব্যয় দুই লাখ টাকা। মোটরযান-সংক্রান্ত খরচ বছরে ২০ হাজার টাকা। তিনি গত অর্থবছরে পারিবারিক ব্যয় ও আয়কর দেওয়াসহ খরচ করেন ১০ লাখ ৯৫ হাজার ৩৫১ টাকা। তাঁর কোনো প্রকার ঋণ বা দায় নেই বলেও উল্লেখ আছে।
হলফনামা অনুযায়ী, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বর্তমানে ফৌজদারি মামলার সংখ্যা ১৬টি। এর মধ্যে ১০টি হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত, চারটি তদন্তাধীন, একটি পুনঃতদন্তাধীন ও একটির অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চুড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। অতীতে ফৌজদারি মামলার সংখ্যার কলামে বলা হয়েছে, মামলা হয়েছিল। তবে মামলা নম্বর ও যে আদালত মামলা আমলে নিয়েছিল, তা জানা নেই। তবে ফলাফল বেকসুর খালাস।

শেখ হাসিনা ইতিপূর্বে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ভোটারদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণসংক্রান্ত ঘরে দীর্ঘ বিবরণ দিয়েছেন। এর মধ্যে নির্বাচনী ইশতেহার মোতাবেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তা, সেতু, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, গৃহায়ণ কর্মসুচি, বৃদ্ধাশ্রম, শিক্ষা উপবৃত্তি, আর্সেনিকমুক্ত পানি প্রকল্প, দুস্থ পুনর্বাসন ও প্রশিক্ষণকেন্দ্র স্থাপনসহ বিভিন্ন উন্নয়ন ও সামাজিক কার্যক্রমে ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ পূরণ করেছেন।
প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন: আহাদ হায়দার, বাগেরহাট ও সুব্রত সাহা বাপী, গোপালগঞ্জ

ফেনী-১ আসনে খালেদার সম্ভাব্য ব্যয় পাঁচ লাখ টাকা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ার-পারসন খালেদা জিয়ার ফেনী-১ আসনে (পরশুরাম, ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া) এবার নির্বাচনে সম্ভাব্য ব্যয় বরাদ্দ পাঁচ লাখ টাকা। তিনি বাড়ি ভাড়া ও ব্যাংকে জমা রাখা টাকার সুদ থেকে এই টাকা খরচ করবেন। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে তাঁর জমা দেওয়া হলফনামায় তিনি এ তথ্য দিয়েছেন।

মনোনয়নপত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতার ঘরে খালেদা জিয়া লিখেছেন ‘স্বশিক্ষিত’। তিনি কোনো শিক্ষাসনদ জমা দেননি। পেশা উল্লেখ করেছেন রাজনীতি। গত নির্বাচনে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের ঘরে উল্লেখ করেছেন ‘প্রযোজ্য নয়’।

মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত গত ৬ নভেম্বর জমা দেওয়া আয়কর বিবরণী অনুযায়ী খালেদা জিয়ার সম্পদের প্রকৃত পরিমাণ তিন কোটি ৭৩ লাখ ৪৭ হাজার ৫৩৫ টাকা। বছরে তাঁর মোট আয় ১২ লাখ ৯৭ হাজার ১৮৩ টাকা। এর মধ্যে বছরে বাড়ি ভাড়া থেকে পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ৮০০ টাকা এবং ব্যাংকে রাখা আমানত থেকে সুদ বাবদ সাত লাখ ৭৩ হাজার ৩৮৩ টাকা আয় করেন তিনি।

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার তারিখ পর্যন্ত তাঁর অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে হাতে নগদ ৩৬ লাখ ৫২ হাজার ৮৪৫ টাকা। আর ব্যাংকে জমা আছে দুই কোটি ৭৫ লাখ ৪২ হাজার ২৮৫ টাকা। এ ছাড়া তিনটি গাড়ি− ১৬০০ সিসি মোটর কার, টয়োটা জিপ, নিশান জিপ। দাম দেখান হয়েছে কেনার সময়ের−৫৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। তাঁর ৫০ তোলা স্বর্ণালংকার আছে, যা বিয়ের সময় উপহার হিসেবে পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন খালেদা জিয়া। ইলেক্ট্রনিকসামগ্রী আছে চার লাখ ৩৫ হাজার টাকার এবং আসবাব দুই লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্যের।
খালেদা জিয়ার গৃহসম্পত্তির মধ্যে বাড়ি ও দালান আছে দুটি। একটি ঢাকা সেনানিবাসের ৬ শহীদ মইনুল সড়কে; আরেকটি ১৯৬, গুলশান এভিনিউ, ঢাকায়। বাড়ি দুটির অর্জনকালীন মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে যথাক্রমে পাঁচ টাকা ও ১০০ টাকা। প্রসঙ্গত, বাড়ি দুটি সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের আমলে দেওয়া। এ ছাড়া উত্তরা থানার উত্তরখানে আট শতাংশ জমি (দাম তিন হাজার ৩০০ টাকা) ও সাভারে ১৭৬৮ অযুতাংশ জমি রয়েছে বিএনপির নেত্রীর। তাঁর কোনো ঋণ বা দায় নেই।

খালেদা জিয়া তাঁর বাৎসরিক মোট ব্যয় উল্লেখ করেছেন তিন লাখ টাকা। এর মধ্যে ব্যক্তিগত ভরণ-পোষণ এক লাখ ২০ হাজার টাকা। যানবাহনসংক্রান্ত যাবতীয় খরচ ৮৪ হাজার টাকা এবং উৎসবসহ অন্যান্য বিশেষ ব্যয় ৯৬ হাজার টাকা।

মামলা: খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের আমলে দায়ের করা ফৌজদারি মামলার সংখ্যা চার এবং সবই হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত আছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়। অতীতে ফৌজদারি মামলার সংখ্যা শীর্ষক কলামে বলা হয়েছে, মামলা হয়েছিল। তবে মামলা নম্বর এবং কোন আদালত মামলা আমলে নিয়েছিলেন, তা জানা নেই। তবে ফলাফল বেকসুর খালাস।

খালেদা জিয়া বগুড়া-৬ ও ৭ নং আসনে চার দলীয় জোটের প্রার্থী হয়েছেন। মনোনয়নপত্রে খালেদা জিয়া শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে ‘স্বশিক্ষায় শিক্ষিত’ বলে উল্লেখ করেছেন।

প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন আবু তাহের, ফেনী

No comments: